বউ যখন বস

,,,,,,,,বউ যখন বস,,,,,,
,
,
বসঃহ্যালো মিস্টার রানা। একবার আমার কেবিনে আসুন
আমিঃপারব না।
বসঃকেন
আমিঃসময় নেই।
বসঃআমি আপ্নার বস বলছি।
আমিঃতাই কি।
বসঃআশ্চর্য,,, আপ্নার কি চাকরি করার ইচ্ছে আছে নাকি নেই।
আমিঃআমার চাকরি নিয়ে আপ্নার এত মাথা ব্যাথা কেন।
বসঃআমি আপ্নার বস।আমি ইচ্ছে করলে আপ্নার চাকরি থাকবে।আর ইচ্ছে না থাকলে চাকরি থাকবে না।
আমিঃঠিকয়াছে আসছি।,,,
হ্যালো ম্যাডাম (টেবিলে দুইটা থাপ্পর দিয়ে)
বসঃবসুন।
আমিঃদরকার নেই। আইয়্যাম কমফারটেবল।
বসঃদরকার আছে বসুন।আমি যা যা বলি সেইগুলো লিখুন।
আমিঃলেখার দরকার নেই আপ্নি বলুন।আমি মুখস্থ করে নিচ্ছি।
বসঃঅনেক বড় লিস্ট। আপ্নি মনে রাখতে পারবেন না।
আমিঃসেইটা আমার ব্যাপার।
বসঃউফ আপ্নি এত কথা বলেন কেন।
আমিঃঠিকয়াছে বলুন।
বসঃনতুন তিনটা কম্পিউটার আর দুইটা কম্পিউটার টেবিল।
আমিঃ এক মিনিট। কম্পিউটার ৩টা আর কম্পিউটার টেবিল দুইটা হবে কেনো এইটাও তিনটা লিখি।
বসঃনা আমার বাড়িতে কম্পিউটার টেবিল আছে।
আমিঃনতুন স্টাফ নিয়োগ হলো দুইটা আর আপ্নি কম্পিউটার কিনছেন তিনটা আর বাকি একটা কে ব্যাবহার করবে।
বসঃআমি বাসায় নিয়ে যাব।
আমিঃসেই জন্যে বল্লেন যে আপ্নার বাসায় কম্পিউটার টেবিল আছে।
বসঃইয়েস।
আমিঃছি ; কম্পিউটার টেবিল কিনতে পেরেছেন আর একটা নতুন কম্পিউটার কিনতে পারেন না।
বসঃতাই আপ্নার কি।যা লিখতে বলছি চুপচাপ তাই লিখুন।
আমিঃওকে ম্যাডাম।
বসঃএই কাগজটা এমডি স্যার এলে সই করে চেক নিয়ে নেবেন ঠিকয়াছে।
আমিঃনা ঠিক নেই।
বসঃঅই আপ্নি এত তেইড়া কেনো।যা বলি সেইটা না শুনলে কিন্ত খবর খারাপ আছে।
আমিঃবেতন কি কম পান নাকি।নিজের টাকা দিয়ে কিনলে কি সমস্যা হয়।
বসঃভুলে যাবেন না যে আমি আপ্নার বস।
আমিঃসেই জন্যেইত এতটুকু সম্মান পাচ্ছেন নইলে দেখিয়ে দিতাম।সামান্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হয়ে অফিসের জিএম হয়ে বসে আছেন।আর আমি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার হয়েও আপ্নার সহকারি।ছি।
বসঃখুব হিংসা হয় তাইনা।
আমিঃহ ঠিকি কইছাও।
বসঃঅই গাইয়া ভাষা বাদ দাও।
আমিঃঅই ফইন্নি তুইতো এখনো বিএসসি করিস নাই।তুই জিএম হইলি কেমনে।
বসঃতরেত মনে হইতেছে ধইরা কুইট্টা হালাই।
আমিঃতরেত মনে হয় তুইল্লা আছাড় মারি।
(এমন সময় এমডি স্যার রুমে আসলেন)
স্যারঃকি ব্যাপার তোমরা কি শুরু করেছ।
আমিঃকি আর শুরু করব স্যার অফিসে স্টাফ নিয়োগ হইছে তিনটা আর অই ফইন্নি কম্পিউটার কিনিতেছে হলো(বস মুখ চেপে ধরলো)
বসঃকিছুই না স্যার এই ফইন্নি টা খালি বেশি কথা কয়।
স্যারঃঠিকয়াছে ঠিকয়াছে।কি কি সই করতে হবে আমার টেবিলে পাঠিয়ে দাও।আগামী ১ সপ্তাহ আমি অফিসে আসব না।
আমিঃকেন আসবেন না স্যার।
বসঃতাই তর কি।তুই চুপ থাক।
স্যারঃকথা কম কাজ বেশি।তোমাদের দুইজনকে দেখছি এক অফিসে রাখা যাবে না।তোমরা আসলে টম আর জেরি।,,,,তারাতারি কাগজ পত্র নিয়ে টেবিলে আসো।
বসঃওকে স্যার আমি পাঠিয়ে দিচ্ছি।(স্যার চলে গেলো)
আমিঃআজকের মতো বেচে গেলি।নইলে দেখতি কি করতাম।আজ একেবারে একটা না একটা কিছু করেই ফেলতাম।
বসঃহাহা হাহা।ব্যাপক বিনুদুন পাইলাম।তুইও কিছু একটা করবি আর সেইটাই আমাকে বেচে থেকে শুনে যেতে হবে।
আমিঃতর আসলে লজ্জা সরম বলতে কিছুই নাই।
বসঃতুই যদি আমার বেস্টি না হইতি তাইলে কবেই তোরে এই অফিস থেকে কিক মেরে বের করে দিতাম।
আমিঃসেই জন্যেইতো তুই আমার বেস্টী।
এইবার পরিচয় দেই।আমার নাম রানা।আর এতক্ষন যার সাথে ঝগরা হলো সে হলো আমার পলিটেকনিক লাইফের বেস্ট ফ্রেন্ড মিলা।আমি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার আর মিলা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। কিন্ত ভাগ্যক্রমে মিলা এখন আমার বস।তাই মেনে নিতে একটূ কস্ট হয়।
মিলাঃঅই কি ভাবছিস।
আমিঃভাবতেছি তুই এত খারাপ কেন।আগেত তুই অনেক ভাল ছিলি।
মিলাঃতুই কি কম খারাপ।যখন পলিটেকনিকে পড়তিস তখনত তোর জন্যে কলেজের গাছের একটা আম কাঠাল পর্যন্ত থাকত না। তোর জন্যে কোনোদিন ক্লাসে ডাস্টার পর্যন্ত থাকত না।ইউনিভারসিটিতে কি কি করেছিস কে জানে।
আমিঃমিথ্যে কথা বলবি না।আমি যে আমগুলো পেড়েছি সেই আমগুলো কে খেয়েছে।তুই একলাইতো আমগুলো পেটে পুরেছিস আর এখন স্বীকার করতে লজ্জা করে তাইনা।
মিলাঃবেশি কথা বলিস না।ম্যামো নিয়ে এমডি স্যারের রুমে যা আর চেক নিয়ে আয়। আর হ্যা চেক নিয়ে কিন্ত অবশ্যই আমার কাছে দিবি।নিজে মাতব্বরি করবি না।
আমিঃওকে।
হ্যালো স্যার আসতে পারি।(এমডি স্যারের দরজা নক করে)
স্যারঃহ্যা আসো। ম্যামো দাও।
আমিঃস্যার আমার অভিযোগ আছে।
স্যারঃবলো।
আমিঃস্যার কতোজন সাধারন ডিপ্লোমা করেই জিএম হয়ে বসে আছে আর আমি বিএসসি হয়েও কোনো প্রমোশন পাচ্ছি না।কেন স্যার।
স্যারঃখুব তারাতারিই তোমার প্রমোশন হবে।তুমি কাজ চালিয়ে যাও।
আমিঃস্যার এই প্রমোশনের জন্যেই কিন্ত আমার বিয়ে হচ্ছে না।মাঝখানে ঝুলে আছে।
স্যারঃকোনো চিন্তা করো না।অচিরেই তোমার একটা ব্যাবস্থা করব।আর এই নাও চেক।
আমিঃথ্যাংকইউ স্যার।(স্যারের রুম থেকে বেরিয়ে মিলার কেবিনে এলাম)
আমিঃসামনে আমি বিয়ে করছি।পাত্রি সন্ধান চলছে দাওয়াত দিলে খেতে আসিস।
মিলাঃআমারো একি অবস্থা।পাত্র সন্ধান চলছে।তোকেও দাওয়াত দিলে খেতে চলে আসিস।
আমিঃসব ছেলের বাবা মা কি গলা পানিতে ডুবে আছে নাকি যে তোর মতো মেয়েকে ঘরে নিয়ে যাবে।
মিলাঃসব মেয়ের বাবা কি সাতারে পরেছে নাকি যে তর সাথে মাইয়া বিয়া দিবো।মাইয়া কি গাঙের পানিত ভাইসা যায় যে তক তুইল্লা দিবো।
আমিঃফইন্নি তুইতো একেবারে আমার মানসম্মান চানাচুর বানায়া ফালাইলি।
মিলাঃএক কাজ কর বাইরে গিয়ে দেখ এমডি স্যার আছে নাকি গেছে।
আমিঃসেতো গেছে কেনো।
মিলাঃকেনো আবার আমি বাড়িতে যাব।আর হ্যা শোন এমডি স্যারের মতো মনে কর আমিও অফিসে নেই। তুই সব কাজ করিস ঠিক আছে।আর হ্যা বিকেল চারটার সময় কফিশপে আসিস।ট্রিট দেব।
আমিঃতুই কিসের ট্রিট দিবি।
মিলাঃদেখছিস না আমি টানা সাতদিন ছুটি পেলাম
আমিঃতোকে কে ছুটি দিলো।
মিলাঃ এক্সকিউজ মি,, রিসপেক্ট মি,,রানা সাহেব আমি আপ্নার বস।সো ভালভাবে কথা বলবে।
আমিঃঠিক আছে।
মিলাঃঠিকয়াছে।কাজে লেগে পড়েন।
আমিঃআমি কিন্ত চারটার সময় কফিশপে যেতে পারব না আমার অনেক কাজ আছে।
মিলাঃতোকে আসতেই হবে। কারন তোর বাসার সামনেই গার্লসস্কুল।তুই সব বাদ দিয়ে শুধু মেয়েদের দিকে তাকিয়ে থাকবি।
আমিঃতো তুই বাসায় থেকে কি করবি।তোর বাসার সামনে ত কোনো কলেজ নেই।
মিলাঃঅই তুই সবাইরে নিজের মতো ক্যারেক্টারলেস
ভাবস কেন।
আমিঃএত বড় মিছা কথা তরে কিডা কইলো যে আমি ক্যারেক্টারলেস।হারামীটা ত দেখতেছি মানসম্মানের কিছুই রাখলো না।অই তুই না বাড়িত যাইবার চাইলি।এখনো যাস না কেন?
মিলাঃএক কাজ করেক এখনি বাসায় যাব।
আমিঃকি কাজ।
মিলাঃলেডি স্টাফ চৈতিরে ছুটি দিয়া দে।
আমিঃকেন।ও আবার তরে কোথায় কি করলো।
মিলাঃও তো কিছুই করে নাই কিন্ত তুই কিছু করতে পারিস। তক দিয়া বিস্বাস নাই।
আমিঃআচ্ছা আমিযে এতক্ষন ধরে তোর কেবিনে বসে আছি তোকে কি কিছু করেছি।
মিলাঃকরেছিসতো।কতো অপমান করলি তুই আমাকে।
আমিঃআমি কিন্ত নেগেটিভ ব্যাপারটার কথা বলছিলাম আর তুই ভাবলি পজিটিভ।
মিলাঃতোর সাহস থাকলে কি তুই ছেড়ে দিতি নাকি।
আমিঃআমি তর মতো অতোটা খারাপ না।আমি ভাল পুলা।।
মিলাঃসেইটার নমুনাত দেখতেই পাচ্ছি। এত ভাল পুলার বউ নাই কেন।
আমিঃতুই থাকতে আবার বউ লাগে নাকি।জিবনটা ত্যানা ত্যানা কইরা দেওয়ার জন্যে তুইই একাই যথেষ্ঠ।
মিলাঃহ এখন ত সব দোস আমার।
আমিঃএকটা কথা বলতে চাইলাম তুই কি রাগ করবি।
মিলাঃযদি রাগ ওঠার মত কথা বলিত তাইলে ত রাগ করবোই।
আমিঃকিছু মনে করবি নাতো। যদি কিছু না মনে করিস তাইলে বলব। আর মাইন্ড করলে বলব না।
মিলাঃঠিকয়াছে তুই বলিস না।
আমিঃযদি শোনার ইচ্ছে না থাকে তাইলে বলব না।
মিলাঃযদিও শোনার ইচ্ছা নাই।তারপরেও তুই কথাটা না বলতে পারলে ত আরেক অশান্তি সৃষ্টি করবি।
আমিঃসেদিন আম্মা তোকে দেখেছে।
মিলাঃতারপর কি।
আমিঃতারপর আম্মা আমাকে বলেছে যে তোর সাথে দেখা করবে।
মিলাঃকরেছেতো।আর কথাও হয়েছে।
আমিঃতুই কি বলেছিস।
মিলাঃকি আর বলব হ্যা বলে দিয়েছি।তোর মা বল্ল যে ছেলে বিয়া করাইতে নিয়ে যেন একেবারে পুকুরে পড়ছি।মোটেও পাত্রি পাইতেছি না।তো আমিও তোর জন্যে না হয় একটু সেক্রিফাইচ করলাম।
আমিঃতুই আর কি সেক্রিফাইচ করছিস।আমিই তো সেক্রিফাইচ করতেছি।
মিলাঃকি সেক্রিফাইচ শুনি।
আমিঃএই বাজারে যে যৌতুক ছাড়া বিয়া করমু এইটা কি কম সেক্রিফাইচ নাকি।
মিলাঃআচ্ছা বল শুনি কয় লাখা টাকা চাস।
আমিঃকিছুই চাই না শুধুধু তোকেই চাই। সেই পলিটেকনিক লাইফ থেকে তোকে লাইক করি কিন্ত ভয়ে কিছু বলা হয়নি।
মিলাঃআমিও। কিন্ত তবে আমার আত্মবিস্বাস ছিল যে যদি তোর বিয়ে ঠিক ও হয়ে যায় তারপরেও আমি সেই বিয়ে ভেঙে দিয়ে তোকে বিয়ে করব।
আমিঃআমি খুব ভয়ে আছি জানিস।
মিলাঃকি ভয়।
আমিঃতোর মতো একটা আজাইর্যা হারামীরে নিয়া সারাজিবন থাকতে হবে।
মিলাঃঅই তুই খারা।অইহানেই দাড়া দেখ তরে কি করি।
আমিঃ(আমারে আর পায় কে। দিছিতো একটা দৌড়,,, একেবারে বিয়ের দিন দেখা হবে,,,,,,, আর নয়তো হাসপাতালে দেখা হবে)
,
,
গল্পটা কেমন লাগলো কমেন্টে জানাবেন।

Comments

Popular posts from this blog

গল্প : ইরা গ্যাং - পর্ব ২

গল্প: ইরা গ্যাং